আলী মুচি'র হজ্জ্ব
জুম্মার নামাজের খুতবাগুলো অনেক
সময়
একঘেয়ে
ও
ক্লান্তিকর হয়ে
থাকে।
কিন্তু,
কিছুদিন আগে
খুতবায়
একজন
ইমামের
একটি
সত্য
ঘটনা
অবলম্বনে বর্ণিত
কাহিনী
শুনে
আমি
বিস্মিত হলাম।
গল্পটা
ছিল
একটি
দরিদ্র
মানুষের হজ্জব্রত পালনের
ঘটনা।
এটি
শুনার
পর
থেকে
প্রতিবার হজ্জ্বের মওসুমে
বিমান
যাত্রা
শুরু
হলে
আমার
এ
গল্পটি
মনে
পড়ে।
বিমানের গতকাল
বিমানের প্রথম
ফ্লাইটটি কাল
বেশ
কিছু
সংখ্যক
হাজী
নিয়ে
ঢাকা
ত্যাগ
করেছে।
গল্পটি
শুনার
পর
আমি
ইন্টারনেটে এটি
খুঁজে
বের
করেছি।
অতপরঃ
ইংরেজি
থেকে
ভাষান্তর করে
বন্ধুদের উদ্দেশ্যে নিবেদন
করলাম।
কাহিনীটি এরকম:
একজন অতিশয় জ্ঞানী, ইসলামী পণ্ডিত আব্দুল্লাহ বিন মোবারক পবিত্র কাবা ঘরের পাশে ঘুমিয়ে ছিলেন। সেসময় তিনি স্বপ্নে দেখেন দুজন ফেরেসতা নিজদের মধ্যে আলাপ করে আকাশ থেকে নেমে আসছে। একজন ফেরেসতা অপরজনকে জিজ্ঞেস করছেন,
" জানেনকি এবার কত লোক হজ্জ্ব করতে এসেছে"? " ছয় লক্ষ"।
আব্দুল্লাহ বিন মোবারকও সেবছর হজ করতে এসেছেন। প্রথম ফেরেসতা এবার জিজ্ঞেস করলেন,
" কতজনের হজ্জ্ব কবুল হয়েছে"? দ্বিতীয় জন উত্তর দিলেন," আমার সন্দেহ হয়, হয়তো কারোটাই নয়।"
আব্দুল্লাহ বিন মোবারক এটি শুনে ভীষণ দু:খিত হলেন। তিনি ভাবলেন," কত লোক এসেছে সারা দুনিয়া থেকে! কত পাহাড়, জংগল, মরুভূমি, সাগর - কত বাঁধা তারা পার হয়ে এসেছে। কত অর্থ তারা ব্যয় করেছে! তাদেরচেষ্টা কি বৃথা যাবে? আল্লাহ তো কারো চেষ্টাই বিফল করেন না।" এটুকু ভাবতেই আবদুল্লাহ শুনতে পেলেন, একজন ফেরেসতা বলছে," দামেস্কে একজন মুচি আছে যার নাম আলী বিন মুফিক, তিনি এবার হজে আসতে পারেননি। কিন্তু আল্লাহ তার হজের বাসনা পূর্ণ করেছেন। শুধু তারই নয়, তার ওসিলায় আল্লাহ সবারই হজ্জ্ব কবুল করেছেন।"
একজন অতিশয় জ্ঞানী, ইসলামী পণ্ডিত আব্দুল্লাহ বিন মোবারক পবিত্র কাবা ঘরের পাশে ঘুমিয়ে ছিলেন। সেসময় তিনি স্বপ্নে দেখেন দুজন ফেরেসতা নিজদের মধ্যে আলাপ করে আকাশ থেকে নেমে আসছে। একজন ফেরেসতা অপরজনকে জিজ্ঞেস করছেন,
" জানেনকি এবার কত লোক হজ্জ্ব করতে এসেছে"? " ছয় লক্ষ"।
আব্দুল্লাহ বিন মোবারকও সেবছর হজ করতে এসেছেন। প্রথম ফেরেসতা এবার জিজ্ঞেস করলেন,
" কতজনের হজ্জ্ব কবুল হয়েছে"? দ্বিতীয় জন উত্তর দিলেন," আমার সন্দেহ হয়, হয়তো কারোটাই নয়।"
আব্দুল্লাহ বিন মোবারক এটি শুনে ভীষণ দু:খিত হলেন। তিনি ভাবলেন," কত লোক এসেছে সারা দুনিয়া থেকে! কত পাহাড়, জংগল, মরুভূমি, সাগর - কত বাঁধা তারা পার হয়ে এসেছে। কত অর্থ তারা ব্যয় করেছে! তাদেরচেষ্টা কি বৃথা যাবে? আল্লাহ তো কারো চেষ্টাই বিফল করেন না।" এটুকু ভাবতেই আবদুল্লাহ শুনতে পেলেন, একজন ফেরেসতা বলছে," দামেস্কে একজন মুচি আছে যার নাম আলী বিন মুফিক, তিনি এবার হজে আসতে পারেননি। কিন্তু আল্লাহ তার হজের বাসনা পূর্ণ করেছেন। শুধু তারই নয়, তার ওসিলায় আল্লাহ সবারই হজ্জ্ব কবুল করেছেন।"
আবদুল্লাহ মোবারক
জেগে
উঠে
সিদ্ধান্ত নিলেন,
তিনি
দামেস্কে যেয়ে
সে
মুচির
সাথে
দেখা
করবেন,
যার
সদিচ্ছা এত
গুরুত্বপূর্ণ বিবেচিত হয়েছে।
দামেস্কে পৌঁছে
লোকজনকে জিজ্ঞেস করলেন
তারা
আলী
বিন
আল
মুফিক
নামের
মুচিকে
চিনে
কিনা।
তারা
তখন
আবদুল্লাহ মোবারককে একটা
বাড়িতে
নিয়ে
গেল।
বাড়ী
থেকে
একটা
লোক
বের
হয়ে
আসলে
আবদুল্লাহ মোবারক তাকে
জিজ্ঞেস করলেন,
তার
নাম
আলী
কি
না।
লোকটি
বললেন,
"হ্যাঁ,
আমি
আলী।"
আপনার
পেশা
কি?
আলী
বিন
মুফিক
জবাব
দিলেন,"
আমি
একজন
মুচি,
জুতা
সেলাই
করি।"
তারপর
আলী
তাকে
খুঁজতে
আসা
আগন্তকের নাম
জিজ্ঞাসা করলেন।
আবদুল্লাহ বিন মোবারক তাঁর পান্ডত্যের জন্য মশহুর ছিলেন। তাঁর পরিচয় পেয়ে আলী আবদুল্লাহ বিন মোবারক কেন তাকে খুঁজছেন এনিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়লেন। যখন আবদুল্লাহ বিন মোবারক হজের বিষয়ে আলীর কোন পরকল্পনা আছে কিনা জানতে চাইলেন, তখন আলী উত্তর দিলেন,"গত ৩০ বছর ধরে আমি হজে যাবার বাসনা পোষন করে আসছিলাম। এবছর হজে যাবার মত উপযুক্ত অর্থ আমি যোগাড়ও করেছিলাম। কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছা তা ছিলনা। তাই, আমার স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিতে পারেনি।"
আবদুল্লাহ বিন মোবারক তাঁর পান্ডত্যের জন্য মশহুর ছিলেন। তাঁর পরিচয় পেয়ে আলী আবদুল্লাহ বিন মোবারক কেন তাকে খুঁজছেন এনিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়লেন। যখন আবদুল্লাহ বিন মোবারক হজের বিষয়ে আলীর কোন পরকল্পনা আছে কিনা জানতে চাইলেন, তখন আলী উত্তর দিলেন,"গত ৩০ বছর ধরে আমি হজে যাবার বাসনা পোষন করে আসছিলাম। এবছর হজে যাবার মত উপযুক্ত অর্থ আমি যোগাড়ও করেছিলাম। কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছা তা ছিলনা। তাই, আমার স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিতে পারেনি।"
আবদুল্লাহ বিন
মোবারক
জানতে
উদ্বিগ্ন ছিলেন
কিভাবে
মানুষটির হজ্জ্ব
কবুল
হল
এবং
অন্য
সব
হাজীদের জন্য
এটি
আশীর্বাদ হিসেবে
দেখা
দিল,
যেখানে
সে
নিজেই
হজে
যেতে
পারলোনা! আলোচনা
কালে
আবদুল্লাহ বিন
মোবারক
মুচিটির হৃদয়ের
নিস্কলুষতা টের
পেলেন।
ইসলাম
সম্পদ
কিংবা
ক্ষমতােক মহৎ
মনে
করে
না
বরং
সৌজন্য,
সদ্ব্যবহার এবং
হৃদয়ের
উদার্যকেই মর্যাদা প্রদান
করে।
আবদুল্লাহ বিন মোবারক হজে না যেতে পারার কারণ জানতে চাইলে আলী বললেন,"এটা ছিল আল্লার ইচ্ছা"। আবদুল্লাহ বিন মোবারক বিষয়টি বলার জন্য জোর অনুরোধ জানালে অালী বললেন,"একদিন আমি আমার একজন প্রতবেশিকে দেখতে তার বাড়ী যাই। পরিবারটা মাত্র দুপুরের আহারের জন্য বসেছে। আমি ক্ষুধার্ত ছিলাম না। তবুও ভেবেছিলাম প্রতিবেশিটি সৌজন্য হিসেবে আমােক খেতে বলবে। কিন্ত প্রতিবেশিকে কেমন উদ্বিগ্ন মনে হল এবং আমাকে আহারে আমন্ত্রন জানানোর বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চাইল। কিছুক্ষণ পর একটু দ্বিধার সাথে সে আমাকে বলল," দুঃখিত, আমি তোমাকে খাবারে আমন্ত্রণ জানাতে পারলামনা। গত তিন দিন আমাদের ঘরে কোন খাবার নেই। বাচ্চাদের ক্ষুধার্ত মুখ সহ্য করা আমার দুঃসাধ্য হয়ে পড়লে খাদ্যের সন্ধানে বের হয়ে রাস্তায় একটা মৃত গাধা পেলাম। অনন্যোপায় হয়ে সেই মৃত প্রানীটির কিছু মাংস কেটে বাড়ীতে নিয়ে আসি, যাতে আমার স্ত্রী কিছু একটা রান্না করতে পারে। আমাদের শোচনীয় অবস্থায় এটি আমাদের জন্য হালাল। কিন্তু আমি এটি আপনাকে সাধতে পারছিনা।"
আলী বিন মুফিক বলতে লাগলেন," এ কথা শুনে আমার হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হতে লাগল। আমি উঠে সোজা বাড়ী চলে এলাম, হজের জন্য আমার সংগৃহীত তিন হাজার দিনার আমার প্রতিবেশিকে দিয়ে দিলাম। এটা ঠিক এই অর্থ সংগ্রহে আমাকে ক্ষুধার্ত থাকতে হয়েছিল, তবে এটা কেবল হজের টাকা সঞ্চয়ের জন্য। আমার মনে হ'ল বিপদে প্রতিবেশিকে সহায়তা করা আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আল্লাহ সহায়, ভবিষ্যতে কোন এক সময় হজে যাব এ সদিচ্ছা আমার এখনো রয়েছে।"
আবদুল্লাহ বিন মোবারক মুচি আলীর কাহিনী শুনে ভীষণ অনুপ্রাণিত হলেন এবং তার দেখা স্বপ্নের কথা মুচিকে বললেন।
আল্লাহ পরম দয়ালু। তিনি তাদেরকই দয়া প্রদর্শন করেন যারা তার সৃষ্টির প্রতি দয়াশীল। আলী মুচির এ দয়ার্দ্রতা এতই হৃদয়স্পর্শী যে আল্লাহ শুধু তার হজ্জ্ব কবুল করে নিলেন তা নয় যারা সেবছর হজে গেলেন এই এক অছিলায় সবাইকেই তিনি পুরস্কৃত করলেন।প্রতিবেশিদের প্রতি কর্তব্য পালনে ইসলামে কঠোর তাগিদ রয়েছে। একটি হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে,
"সে ব্যক্তি মুসলমান নয়, যে ভরপেট আহার করে আর তার প্রতিবেশি অভুক্ত থাকে"।
আবদুল্লাহ বিন মোবারক হজে না যেতে পারার কারণ জানতে চাইলে আলী বললেন,"এটা ছিল আল্লার ইচ্ছা"। আবদুল্লাহ বিন মোবারক বিষয়টি বলার জন্য জোর অনুরোধ জানালে অালী বললেন,"একদিন আমি আমার একজন প্রতবেশিকে দেখতে তার বাড়ী যাই। পরিবারটা মাত্র দুপুরের আহারের জন্য বসেছে। আমি ক্ষুধার্ত ছিলাম না। তবুও ভেবেছিলাম প্রতিবেশিটি সৌজন্য হিসেবে আমােক খেতে বলবে। কিন্ত প্রতিবেশিকে কেমন উদ্বিগ্ন মনে হল এবং আমাকে আহারে আমন্ত্রন জানানোর বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চাইল। কিছুক্ষণ পর একটু দ্বিধার সাথে সে আমাকে বলল," দুঃখিত, আমি তোমাকে খাবারে আমন্ত্রণ জানাতে পারলামনা। গত তিন দিন আমাদের ঘরে কোন খাবার নেই। বাচ্চাদের ক্ষুধার্ত মুখ সহ্য করা আমার দুঃসাধ্য হয়ে পড়লে খাদ্যের সন্ধানে বের হয়ে রাস্তায় একটা মৃত গাধা পেলাম। অনন্যোপায় হয়ে সেই মৃত প্রানীটির কিছু মাংস কেটে বাড়ীতে নিয়ে আসি, যাতে আমার স্ত্রী কিছু একটা রান্না করতে পারে। আমাদের শোচনীয় অবস্থায় এটি আমাদের জন্য হালাল। কিন্তু আমি এটি আপনাকে সাধতে পারছিনা।"
আলী বিন মুফিক বলতে লাগলেন," এ কথা শুনে আমার হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হতে লাগল। আমি উঠে সোজা বাড়ী চলে এলাম, হজের জন্য আমার সংগৃহীত তিন হাজার দিনার আমার প্রতিবেশিকে দিয়ে দিলাম। এটা ঠিক এই অর্থ সংগ্রহে আমাকে ক্ষুধার্ত থাকতে হয়েছিল, তবে এটা কেবল হজের টাকা সঞ্চয়ের জন্য। আমার মনে হ'ল বিপদে প্রতিবেশিকে সহায়তা করা আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আল্লাহ সহায়, ভবিষ্যতে কোন এক সময় হজে যাব এ সদিচ্ছা আমার এখনো রয়েছে।"
আবদুল্লাহ বিন মোবারক মুচি আলীর কাহিনী শুনে ভীষণ অনুপ্রাণিত হলেন এবং তার দেখা স্বপ্নের কথা মুচিকে বললেন।
আল্লাহ পরম দয়ালু। তিনি তাদেরকই দয়া প্রদর্শন করেন যারা তার সৃষ্টির প্রতি দয়াশীল। আলী মুচির এ দয়ার্দ্রতা এতই হৃদয়স্পর্শী যে আল্লাহ শুধু তার হজ্জ্ব কবুল করে নিলেন তা নয় যারা সেবছর হজে গেলেন এই এক অছিলায় সবাইকেই তিনি পুরস্কৃত করলেন।প্রতিবেশিদের প্রতি কর্তব্য পালনে ইসলামে কঠোর তাগিদ রয়েছে। একটি হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে,
"সে ব্যক্তি মুসলমান নয়, যে ভরপেট আহার করে আর তার প্রতিবেশি অভুক্ত থাকে"।
যোগাযোগ ব্যবস্থার বিস্ময়কর উন্নতিতে যখন
সারা
পৃথিবী
হাতের
মুঠোয়
চলে
এসেছে,
তখন
শুধু
বাড়ীর
আশেপাশে নয়,
যারা
সহজ
যোগাযোগ সীমার
মধ্যে
রয়েছে,
দেশের
সেসব
গরীব
দুঃখী
মানুষেরাও আমাদের
প্রতিবেশি বৈকি!
কল্পনা
করা
যাক,
সামান্য অর্থাভাবে কত
মানব
সন্তান
জীবনের
মৌলিক
অধিকার
বঞ্চিত
হয়ে
মানবেতর জীবন
যাপন
করছে!
বর্ণিত
প্রেক্ষাপটে 'আলী
মুচি'র কাহিনীটি নিসন্দেহে অর্থবহ।
1 টি মন্তব্য:
Valo
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন